মো: সাইফুল ইসলাম খোকন, চকরিয়া ::
গ্রাম বাংলার চিরচেনা ছনের ছাউনির ঘরের প্রচলন দিনে দিনে কমে আসছে। হারিয়ে যেতে বসেছে আবহমান কালের গ্রামীণ ঐতিহ্যের এই চিহৃটি।
আধুনিকতার উৎকর্ষতায় বর্তমানে ছনের তৈরি ঘর বিলুপ্তির পথে বললেই চলে। খুব বেশিকাল আগে যেখানে প্রতিটি গ্রামের দু’চারটি ছনের তৈরি ঘর চোখে পড়ত বর্তমানে কয়েকটি ইউনিয়ন মিলেও এই ধরনের ঘর চোখে পড়েনা।
এদিকে টিনের অত্যধিক ব্যবহারের ফলে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। কারণ, দেশে উৎপাদিক অধিকাংশ টিন পরিবেশ বান্ধব নয়। তবে উপজেলা বিভিন্ন উপজাতি পাড়ায় এখনো কয়েকটি ছনের ঘর চোখে পড়ে।
ইতিহাসবিদ ও স্থানীয় বৃদ্ধদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আজ থেকে বিশ-পঁচিশ বছর আগেও গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে ছনের ছাউনির ঘর ছিল। চকরিয়া উপজেলা ও পাশ্ববর্তী লামা- আলীকদমের পাহাড়ের পাওয়া যেত বিপুল পরিমাণ ছন। যা ব্যবহার করা হতো ঘরের ছাউনি ও পানের বরজের কাজে। নিম্নবিত্তের মানুষ এই ছন দিয়ে ঘরের ছাউনি দিতো।
এ ছাড়া কাঠুরীয়ারা ছন বিক্রি করে সংসার চালাতো। স্থানীয় ভাবে গরীরের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘর বলে পরিচিত ছিল এই ছনের ছাউনির ঘর। উচ্চবিত্তরাও শখের বসে পাকা ঘরের চিলি কোটায় ও রান্নাঘরে ছন ব্যবহার করতো।
উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের দিগরপানখালীর বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক গোলাম কাদের বলেন, এখনো আমাদের গ্রামে কয়েকটি ছনের ঘর থাকলেও বিগত কয়েক বছর ধরে তা দেখা মিলতেছেনা। তিনি নিজেও কিন্তু কয়েক বছর আগে ছনের ছাউনি ফেলে টিনের ছাউনি দেন। বর্তমানে বাড়ি দালান ঘর তৈরী করা হচ্ছে। কিন্তু শীত ও গরম উভয় মৌসুমে আরামদায়ক ছনের ছাউনির ঘর।
জানা গেছে, ছনের ছাউনির ঘর তৈরির জন্য গ্রামে কিছু কারিগর ছিল। তাদের মজুরি ছিল ৩শ থেকে ৫ শত টাকা পর্যন্ত। বিশেষ কায়দায় ছনকে সাজিয়ে কয়েকটি ধাপের মাধ্যমে ছাউনি দেয়া হতো। ছাউনির উপরে বাঁশ ও বেত দিয়ে শক্ত করে বেঁধে দিয়ে পানি ছিটানো হতো। যাতে করে সহজে ছনগুলো বাঁশের উপর বসে যায়।
সাধারণত বন্যা, ভূমিকম্প, ঝড় কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এসব ঘর শতাধিক বছর পর্যন্ত টিকে থাকে। তবে পূর্ব পুরুষের স্মৃতি ধরে রাখতে অনেকেই দু-একটা মাটির ঘর টিকিয়ে রেখেছেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল ভয়াবহ বন্যা ও ঘুর্ণিঝড়ের সাথে চট্টগ্রাম-কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। এ সময় এখানকার ছনের তৈনি ঘরগুলোর ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। এরপর থেকে মানুষ মাটি ও ছনের ঘর তৈরির আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। শুরু হয় পাকা দালান, টিনের বেড়া ও চাউনি দিয়ে ঘর তৈরির রেওয়াজ। এ ছাড়া বছর বছর ছন পরিবর্তন করতে হয় বিধায় একে অনেকে ঝামেলা মনে করে।
সেই থেকে ছনের ছাউনি ঘরের সংখ্যা কমতে শুরু করে। বর্তমানে এই ঘর খুব একটা চোখে পড়েনা। হারিয়ে যেতে বসেছে বাঙালীর ঐতিহ্যের এই চিহৃটি। হয়ত সেদিনটি খুব বেশি দূরে নয়; যেদিন ছনের ছাউনির ঘরের কথা মানুষের মন থেকে চিরতরে হারিয়ে যাবে। আর আগামী প্রজন্ম রূপকথার গল্পেই এই ঘরকে স্থান দিতে স্বাচ্ছন্দবোধ করবে।
প্রকাশ:
২০১৭-০৪-১৯ ১৫:০৮:৫৩
আপডেট:২০১৭-০৪-১৯ ১৫:০৮:৫৩
- চকরিয়ায় আ,লীগের প্রভাবে দখল হওয়া বাজার ফিরে পেতে চায় ব্যবসায়ীরা
- চকরিয়ার যুবলীগ নেতা কছিরের রয়েছে সম্পদের পাহাড়
- চকরিয়ায় ডাকাতের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হলেন তরুণ সেনা কর্মকর্তা তানজিন
- ফাইতং ইউপি চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবীতে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ ও মানববন্ধন
- চকরিয়ায় ৪৬টি পূজা মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপনের প্রস্তুতি
- চকরিয়ায় ইট বোঝাই ডাম্পার ট্রাকের চাপায় মোটরসাইকেল চালক নিহত
- চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালীতে ভন্ড বৈদ্যের আবির্ভাব
- বৈষম্য মূলক নিয়োগে ফুঁসে উঠেছে চৌদ্দ হাজার সিএইচসিপি!
- কক্সবাজারে যোগ হচ্ছে রিজিওনাল ট্রেনিং সেন্টার :
- চকরিয়ায় যাত্রীবাহি বাস চাপায় মোটরসাইকেল চালক নিহত
- আগস্টে ৪৬৭ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪৭৬
- চকরিয়ায় ডাকাতের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হলেন তরুণ সেনা কর্মকর্তা তানজিন
- ফাইতং ইউপি চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবীতে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ ও মানববন্ধন
- চকরিয়ার যুবলীগ নেতা কছিরের রয়েছে সম্পদের পাহাড়
- সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপর হামলার প্রতিবাদে চকরিয়ায় মানববন্ধন
- চকরিয়ায় যাত্রীবাহি বাস চাপায় মোটরসাইকেল চালক নিহত
- কক্সবাজারে যোগ হচ্ছে রিজিওনাল ট্রেনিং সেন্টার :
- চকরিয়ায় ৪৬টি পূজা মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপনের প্রস্তুতি
- আগস্টে ৪৬৭ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪৭৬
- তামাকের ব্যবহার কমাতে শক্তিশালী কর পদক্ষেপ ও আইনের বিকল্প নেই
- চাঁদাদাবী, ভাঙচুর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে চেয়ারম্যান ইউনুছসহ ১২জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা
- চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালীতে ভন্ড বৈদ্যের আবির্ভাব
পাঠকের মতামত: